দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে গভর্নরের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য
শুক্রবার,১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে গভর্নরের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য

by admin
দেশের অর্থনীতির বর্তমান

দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে গভর্নরের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ঋণের সুদহার বাড়লেও ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে গভর্নরের এই বক্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য।

দেশের অর্থনীতির বর্তমান: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে আজ শুক্রবার সেলিম রায়হান লেখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, ‘ঋণের সুদহার বাড়লেও ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে আমার মতে, দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। যদিও সুদের হার বাড়ানোর উদ্দেশ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, তবে এটি ব্যবসায়ীদের জন্য বেশ কিছু নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গতকাল বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ব্যক্তিগত সফরে যান। সেখানে  দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়লেও ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা মুনাফা করেই ব্যবসা করছেন। গভর্নরের এই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে নিজের মত তুলে ধরেন অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান।

সেলিম রায়হান আরও লেখেন, ঋণের সুদহার বৃদ্ধি সরাসরি ব্যবসায়িক খরচ বাড়াচ্ছে। বিশেষত ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসা উচ্চ সুদহারের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উচ্চ সুদহার ব্যবসার নগদ প্রবাহের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে এবং ব্যবসা পরিচালনার খরচ বাড়াবে। এ ছাড়া সুদের হার ক্রমান্বয়ে বাড়ানোর ফলে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমে যেতে পারে, যা বিনিয়োগে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ব্যবসায়ীরা যদি উচ্চ সুদহার পরিশোধ করতে না পারেন, তবে নতুন প্রকল্প বা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিতে সংকুচিত হয়ে পড়বেন। এর ফলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি আরও শ্লথ হবে, যা কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সেলিম রায়হান তাঁর ফেসবুক পোস্টে আরও লেখেন, সুদের হার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না। কারণ, মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশে মুদ্রানীতি কেবল সুদের হার বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু এর সঙ্গে সমন্বিত পদক্ষেপ যেমন যথাযথ রাজস্বনীতি ও বাজার নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকায় সাফল্য পাওয়া কঠিন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সরকার যদি একই সময়ে বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করে এবং মুদ্রানীতির পাশাপাশি মূল্য সংযোজন কর বা ট্যাক্স–সংক্রান্ত সমন্বয়ের অভাব থাকে, তবে শুধু সুদের হার বৃদ্ধি করার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

সবশেষে সেলিম রায়হান লেখেন, গভর্নরের বক্তব্য গভীরভাবে চিন্তা করলে বলা যায়, ঋণের সুদহার বাড়ানোয় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন না হওয়ার বিষয়টি বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

You may also like

Leave a Comment

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ দেলোয়ার হোসেন

যোগাযোগঃ অফিসঃ ৪৩/বি, নবাবগঞ্জ বাজার, লালবাগ, ঢাকা-১২১১

মোবাইলঃ ০১৭১১৬৬৪৬৬৫

Email: info@janaojana.com

2025 All Rights Reserved by Binodonkhabor.com

অনুসরণ করুন